“হরণী-চানন্দী ইউনিয়নের বাতিঘর”
হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট হাই স্কুল।
গত ২৪ অক্টোবর ২০১৯ খ্রি: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২৭৩০ শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান এমপিও ভূক্তির মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে এক নিরব বিপ্লব সাধিত হলো। প্রধানমন্ত্রী একই সাথে তাদের কাছে দাবি
করেন শিক্ষার মান ও পরিবেশ যেন বজায় থাকে তা না হলে যে কোনো সময় এমপিও ভূক্তির আদেশ বাতিল হয়ে যেতে
পারে। এমপিও ভূক্তিতে জুনিয়র ক্যাটাগরিতে বয়ারচরস্থ হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট জুনিয়র হাই স্কুলটি অর্ন্তভুক্ত হয়।
সমিতি ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট সকল মহলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। ১১/০২/২০০৮ ইং খ্রি. চর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট জুনিয়র হাই স্কুল
প্রতিষ্ঠার ১০(দশ) বছরের মধ্যে স্কুল অবকাঠামো, শিক্ষার্থির সংখ্যা ও পাবলিক পরিক্ষায় ভালো ফলাফল ইত্যাদির জন্য
স্বল্প সময়ে অন্যদের ডিঙ্গিয়ে এমপিও ভূক্তি অর্জন করেছেন। এটি অনুদান নয়- এটি পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক ও শিক্ষা
বঞ্চিত অভিভাবকদের দীর্ঘ এক যুগের অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফসল। হাতিয়া জনকল্যাণ সমিতির ৫০ বৎসরের অধিক সময়ের
কর্মকান্ডের মধ্যে হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট হাই স্কুল শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জন কালজয়ী হবে। অনাদিকাল হাতিয়ার
নাম ধারন করে শিক্ষার মশাল প্রজ্জলিত রাখবেন।
আমাদের দেশের অতি বা প্রাচীন কাল থেকে এক জনশ্রুতি রয়েছে। জীবনের জন্য জীবিকা, জীবিকার জন্য কর্ম, আর
কর্মের জন্য চাই শিক্ষা। শিক্ষা ব্যক্তি ও জাতির উন্নয়নে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। শিক্ষা একপ্রকার জ্যোতি বা আলো। শিক্ষা
মানুষের মন থেকে সংকির্ণতা, স্বার্থপরতা, হিংসা বিদ্বেষ, নানা ধরনের অন্ধকার ও কুসংস্কার বিদূরীত করে। তাই যুগে যুগে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ শিক্ষার আলো পেতে চাইত। শিক্ষাবিদদের মতে, যাহা ব্যক্তির শারিরীক, মানসিক,
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও জীবন যাপনের উপকরন ও আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনায়ন করেন তাহার নাম শিক্ষা।
এটি একটি চলমান প্রকৃয়া।
হাতিয়ার ভৌগলিক অবস্থান অনেক ঐতিহাসিকদের লেখায় স্থান পেয়েছে। ২৫০/৩০০ বৎসরের হাতিয়া আর এখনকার
হাতিয়া ভৌগলিক দৃষ্টিতে ভিন্ন। এই ভিন্নতা মানুষের সামাজিক প্রয়োজনে হয়নি। হয়েছে রাক্ষসি মেঘনার করাল গ্রাসে।
একটা সময় ** রামমতি (উত্তর হাতিয়া) ও হাতিয়া পাশাপাশি ছিল। দুটি একই প্রশাসনিক এলাকা হিসাবে শাসিত হত।
১৯৬২-৬৩ সন থেকে ভাঙ্গা শুরু হয়। ১৯৬৯/৭০ এ ভাঙ্গা প্রবল বেগে বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে হরণী- চানন্দী নীলক্ষির
হাজার হাজার মানুষ জমি জমা, ঘরবাড়ী, সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসে যায়। এসব এলাকার বিপুল সংখ্যক গরীব ও খেটে
খাওয়া মানুষদের বিরাট অংশ নোয়াখালীর মূল ভূখন্ডের দক্ষিন দিকের জেগে উঠা চরে আশ্রয় নিতে শুরু করে। বনবিভাগ
এসব নতুন গজিয়ে উঠা চরে বনাঞ্চল গড়ে তুলেছিল। এই গভির বনাঞ্চল কেটে বসতির পর বসতি গড়ে উঠে। একটি
চরের নামকরণ হয় বয়ার চর হিসাবে। নদী ও বড় বড় খালই ছিল যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। আনুমানিক ৮/১০
বৎসরের মধ্যে বিশাল জনপদ গড়ে উঠে। হাতিয়া বাজার এলাকা চর সমুহের প্রান কেন্দ্র হিসাবে স্বীকৃত হয়। আমরা
হাতিয়া থেকে ইওডঞঈ এর স্টিমার যোগে এপার (উত্তর পাড়) এসে আকাবাঁকা নদীপথে প্রায় ঘন্টাখানেক পর ৪নং
ঘাটে নামতাম। এখন ৪নং ঘাটে পাকা পোল হাতিয়া দ্বীপকে মূল ভূখন্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে ফেলেছে। ৪নং ঘাটের নদী
ছিল খর¯্রােতা। বাটার সময় পারাপার ছিল ঝুকিপূর্ন। এই নদী এখন ছোট খালের আকারে বেঁচে আছে। চট্টগ্রামস্থ হাতিয়া জনকল্যাণ সমিতি এই চরাঞ্চলে স্কুল করার চিন্তা ভাবনা করছিল। এই মর্মে ২০০০ সনে হাতিয়া বাজার
একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য সতিমির কর্মকর্তা মরহুম মানছুরুল হক, জনাব মরহুম মো: ইলিয়াছ
মিয়া, জনাব শাহাদাত হোসেন ও জনাব মদিনুল হক-কে সফরে পাঠান। এলাকাবাসীর চাওয়া পাওয়ার সাথে সংগতি
রেখে স্কুল স্থাপন করা যায় কিনা রিপোর্ট দিতে অনুরোধ করা হয়। সফর শেষে কমিটি প্রতিবেদন জমা দেন। রিপোর্টের
প্রতিপাদ্য ছিল স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় গুটি কতেক প্রাইমারী নিবু নিবু করে চলছে। তারপর পড়ার আর কোন ব্যবস্থা নাই। এলাকাবাসী চায় একটি জুনিয়র স্কুল প্রতিষ্ঠিত হোক। যেহেতু ঐসব এলাকায় কোন প্রসাশন ছিলনা, তাদের আবেদন
নিবেদনের কোন পথও ছিলনা। তাদের আকুতিতে কমিটির সদস্যদের মন গলে যায়। কিন্তু ভূমির মালিকানা বা সরকারী
বন্দোবস্ত ছাড়া ভূমির উপর স্কুল প্রতিষ্ঠা হলে শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন পাবেনা। এমতাবস্থায়, সমিতি স্কুল প্রতিষ্ঠার পথে
ঝুকি নিয়ে আগে বাড়ালোনা।
দিন যায় বৎসর যায়। ঈউঝচ এর অধীনে বেড়ী বাধ তৈরী হয়। অভ্যন্তরিন কিছু রাস্তাঘাট তৈরী হয়। এক পর্যায়ে জমি
বন্দবস্তের প্রকৃয়া চালু হয়। হাতিয়ার নির্বাহী অফিসার কয়েকবার ঐ এলাকা সফর করেন। জেলা প্রশাসন থেকেও
কর্মকর্তাদের আসা যাওয়া শুরু হয়। ওদের ভ্রমনের মূল উদ্যোগ ছিল বসতি স্থাপনকারিদের মধ্যে জমি বন্দবস্তের প্রকৃয়া
নির্ধারন করা। ২০০৫ সনে বয়ার চরে ভূমি অফিস স্থানান্তরীত করা হয়। বয়ার চরে একটি সাইক্লোন সেন্টার করার কাজ
শুরু হয়। স্কুল স্থাপনের পক্ষে জন দাবী ওঠে। তখনকার জেলা প্রশাসক জনাব মো: হাবিবুল কবির চৌধুরী নিজেই স্কুলের
প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আবুল হাশেমকে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয়
পদক্ষেপ নিতে বলেন। স্থানীয়দের মুখে চট্টগ্রামস্থ হাতিয়া জনকল্যাণ সমিতির পূর্বেকার স্বদিচ্ছার কথা জানতে পেরে
সমিতির প্রাক্তন সভাপতি জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, এফসিএমএ সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। জনাব মোহাম্মদ
মহিউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেবের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। ২০০৭ সালের শুরুর দিকে হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আবুল হাশেম জমি বরাদ্দের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। বিষদ আলোচনার জন্য জেলা প্রশাসকের
সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। আলোচনায় স্কুল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে মোটামুটি সিদ্ধান্ত হয়। সমিতির পক্ষ থেকে স্কুলের
নাম ও পরিচালনায় সমিতির এখতিয়ারে থাকবে। জেলা প্রশাসক হাতিয়া বাজারে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময়ের
পর মত পরিবর্তন করেন। সেখানকার স্থানীয়রা স্কুলের নাম “হাতিয়া বাজার জুনিয়র স্কুল” করতে চায় এবং পরিচালনাতেও
তাহারা থাকবে। এই প্রস্তাবে সমিতি রাজি হয়নি। মাঝখানে কয়েক মাস চলে গেল। জেলা প্রশাসক চাইছিলেন ২০০৭
এর শিক্ষা বৎসরে স্কুল শুরু হোক। তিনি নিজ তহবিল থেকে কিছু টাকা স্থানীয়দের দিলেন। বর্তমান প্রধান শিক্ষক
মোহাম্মদ আলী মানছুরকে মৌখিক ভাবে নিয়োগ দিলেন (জেলা প্রশাসক কর্তৃক মাওলানা করিমুল মোস্তাফা সাহেবকে
দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো)। ছাত্র ভর্তির প্রকৃয়া শুরু করতে নির্দেশ দিলেন। অগ্রগতি আশানুরুপ না হওয়ায় পুনরায় সমিতির
সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পূর্ব অবস্থান থেকে সরে এসে সমিতির শর্ত মেনে নিতে রাজি হলেন। এমতাবস্থায়, সমিতি
স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রকৃয়া হাতে নেন। সিদ্ধান্ত হয় এলাকাবাসী স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের বরাবরে
জমি চেয়ে আবেদন করবেন। সমিতির শিক্ষা ট্রাস্টের নির্বাহী সম্পাদক প্রফেসর শামসুদ্দিন ও জনাব শাহাদাত হোসেনকে
হাতিয়া বাজার এলাকায় পাঠান। ওনারা স্থানীয়দের সঙ্গে তহশীল অফিসে বসে একমত বিনিময় সভা করেন। তখন
তহশীল অফিসের দ্বায়িত্বে ছিলেন জনাব গোলাম ফারুক। নতুন ভাবে নামকরন করা হরণী ও চানন্দী ইউনিয়নের বিশিষ্ট
শিক্ষা অনুরাগীদের সঙ্গে এক সভা করে সমিতি কর্তৃক স্কুল স্থাপনের প্রকৃয়া নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। সভায় সিদ্ধান্ত
হয় স্থানীয়রা চট্টগ্রামস্থ হাতিয়া জনকল্যাণ সমিতিকে হাতিয়া বাজারে একটি জুনিয়র হাই স্কুল স্থাপনের আবেদন জানাবে
এবং স্থানীয়রা এই ব্যাপারে নিঃশর্ত সহযোগিতা করবেন। জনকল্যাণ সমিতির সভাপতির বরাবরে স্কুল স্থাপনের আবেদনটি হাতে পাওয়ার পর ১০/০৬/২০০৭ ইং তারিখে হাতিয়া
জনকল্যাণ শিক্ষা ও গবেষণা ট্রাস্ট এর এক সভা ইঞ্জিনিয়ার মাকছুদুর রহমান সাহেবের মোহাম্মদ আলী রোডস্থ বাসায়
অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন;
১। জনাব মাহমুদ আলী রাতুল সভাপতি
২। প্রকৌশলী মাকছুদুর রহমান সহসভাপতি
৩। জনাব নাসির উল্লাহ সহসভাপতি
৪। জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এফসিএমএ সদস্য
৫। জনাব শাহাদাত হোসেন সদস্য
৬। জনাব ওবায়দুল কবির নসরত সদস্য
৭। মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান সমিতি সম্পাদক
৮। প্রফেসর শামসুদ্দিন
৯। জনাব হাছান নুরী
দীর্ঘ সময় ধরে স্কুলের নামকরণ, স্কুল প্রতিষ্ঠার খুটি নাটি ও স্কুল পরিচালনার প্রকিবন্ধকতা ও উত্তরনের উপায়, অর্থ
যোগান, শিক্ষক প্রাপ্যতা, স্কুল ঘর নির্মান ব্যয় ইত্যাকার বিষয়াদি আলোচনা হয়। স্কুলের নামকরন কি হবে এই নিয়েও
দীর্ঘ আলোচনা হয়। কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেন একটা পর্যায়ে বয়ার চর এলাকাটি হাতিয়া উপজেলায় নাও থাকতে
পারে। এদের যুক্তি ছিল ২/৩ জেনারেশন পরে দাবি উঠবে কেন আমরা ঝুকি নিয়ে সময় ও টাকা খরচ করে ভয়াল
মেঘনা পাড়ি দিয়ে হাতিয়া উপজেলার মূল ভুখন্ডে যাব। এই ধরনের দাবি উঠলে সকলেই মূ ল ভুখন্ডের সঙ্গে ওদের
অন্তরভুক্তি সমর্থন করবে। তাই স্কুলের নামের সঙ্গে হাতিয়ার ও সমিতির পরিচিতি থাকতে হবে। সভায় সিদ্ধান্তের মধ্যে
অন্যতম ছিল;
১। ট্রাস্টের নির্বাহী সম্পাদক নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের বরাবরে তিন একর জমি বরাদ্দ দেয়ার আবেদন করবেন।
২। স্কুলের নাম ঠিক করা হয় হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট জুনিয়র হাই স্কুল।
৩। সমিতির প্রাক্তন সভাপতি ও ট্রাস্ট এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এফসিএমএ, প্রকৌশলী মাকছুদুর রহমান
ও জনাব শাহাদাত হোসেন- কে জেলা প্রশাসকের আহুত সভায় যোগদানের জন্য অনুরোধ করেন।
৪। স্কুল প্রতিষ্ঠাকালিন অবকাঠামো ও ৫ বৎসরের পরিচালনার জন্য অর্থ প্রয়োজন হতে পারে, এই অর্থের উৎস ও
পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সমিতির সভাপতি জনাব মাহমুদ আলী সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মরহুম মোস্তাফিজুর রহমান
কে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়।
৫। স্কুল পরিচালনার ব্যাপারে সম্পূর্ন ভাবে সরকারী নিয়ম কানুন ও নীতিমালা অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৬। জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এফসিএমএ সাহেবকে জেলা প্রশাসক, হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আবুল
হাশেম, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করার দ্বায়িত্ব অর্পন করা হয়। স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় কালটি ছিল সমস্যা সংকুল। সমিতির সদস্যরা চায় তাদের ত্যাগের মূল্যায়ন, স্থানীয়রা চায় তাদের
মতামতের প্রাধান্য, প্রশাসন চায় তাদের উদ্যোগের প্রতিচ্ছবি। তৃমূখী চাওয়া পাওয়া সমন্বয় করে স্কুল স্থাপনের প্রকৃয়া
এগোতে থাকে। সমিতি ও ট্রাস্টের তৎকালীন কার্য্যকরি পরিষদের স্বদিচ্ছা ও মনোবলের দৃঢ়তার কাছে সকলে ছাড় দিয়ে
স্কুল প্রতিষ্ঠার পথ চলাকে এগিয়ে নেয়। জেলা প্রশাসকের সর্বশেষ দাবী ছিল তিনি স্থানীয়দেরকে নিয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে যাকে শিক্ষক হিসাবে মৌখিক নিয়োগ দিয়ে কার্য্যμম শুরু করেছিলেন তিনি যদি সমিতির বিচারে উপযুক্ত মনে
হয় তাহলে তাকে যেন শিক্ষক হিসাবে রাখা হয়। বলা বাহুল্য প্রথম আলোর মত পত্রিকায় ২৩/০২/২০০৮ ইং তারিখে
বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগ পরিক্ষায় যাচাই করার মত আবেদন পাওয়া যায়নি। ১৫/০৩/২০০৮ ইং তারিখে আইল্যান্ড
সিকিউরিটিজ লিঃ এর ফারুক চেম্বার, ১৪০৩ শেখ মুজিব রোডস্থ অফিসে শিক্ষক নিয়োগ ইন্টারভিউ অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ
কমিটি নি¤েœ উল্লেখিতদের ব্যাপারে নিয়োগের সুপারিশ করেন। নিয়োগ কমিটিতে ছিলেন প্রফেসর নাঈমা শেলী। ১। জনাব মোহাম্মদ আলী মানছুর জেলা প্রশাসকের সুপারিশ কৃত
২। জনাবা মিনারা বেগম
৩। তানভীরুর রহমান
৪। হরিকান্ত দাস
৫। নিজাম উদ্দিন
ঙহব বষবাবহ ২০০৭ বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থার স্মরনীয় ঘটনা। কাকতালিয় ভাবে ১১ ফেব্রুয়ারী ২০০৮ বয়ারচর
বাসির জীবনে অনন্য দিন। এই দিনে তাদের প্রতিক্ষিত শিক্ষার আকাঙ্খা পুরন হতে চলেছে। বয়াচরের মানুষের চোখে
মুখে বইছিল আনন্দের বন্যা। সেইদিন চট্টগ্রামস্থ হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ট্রাস্টের কর্মকর্তাগন
স্বদলবলে বয়ারচরে হাতিয়া বাজারে আসেন। উদ্দেশ্য ঐ দিন ঐ এলাকায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর ভিত্তি প্রস্তর
স্থাপন হবে। আরো আসেন নোয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক জনাব মো: হাবিবুল কবির চৌধুরী, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা
জনাব কাজী সলিমুল্লাহ ও হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আবুল হাশেম। হরণী চানন্দীর দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত
তহশীলদার জনাব গোলাম ফারুক সকলকে অভ্যার্থনা জানান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বাবু দীপক চμবর্তী, হাতিয়া উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা, স্থানীয় বিশেষ ব্যক্তিদের
মধ্যে ছিল মাওলানা করিমুল মোস্তফা, বাজার কমিটির সেμেটারী জনাব শাহজাহান সিরাজ, মসজিদের ইমাম জনাব
মুফতি ইসমাইল, মাওলানা আলাউদ্দিন, হাজী ইউসুফ, আমিরুল ইসলাম (মতিন), নজরুল ইসলাম এবং স্থানীয় শিক্ষা
পিপাসু ব্যক্তিবর্গ। ১০/১২ বৎসর শিক্ষা পাওয়ার অধিকার বঞ্চিত গরীব দুখি এলাকাবাসির উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার
মত। হাতিয়ার দুই কৃতি সন্তান চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক জনাব এ.কে.এম. শামসুল আলম- ইসলামের ইতিহাস,
ড. অধ্যাপক আ.খ.ম আব্দুল কাদের, জনাব নাসির উল্লাহ প্রমুখ উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। হাতিয়া উপজেলার
নির্বাহী অফিসার জনাব আবুল হাশেম এর পরিচালনায় উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান সম্পূর্ন করে ধানক্ষেতের মধ্যে হাতিয়া জনকল্যাণ
শিক্ষা ট্রাস্ট হাইস্কুলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়।
তখনকার সময়ে হাতিয়া বাজার এলাকায় তেমন অবকাঠামো ছিল না। হাতিয়া বাজার ঘূর্নীঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ছিল
নির্মানাধীন। নিচতলার খোলা অংশে আমরা উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান করি। টিন দিয়ে চারদিকে বেড়া দিয়ে কক্ষ তৈয়ার করা
হয়। এতবড় একটি মাইলফলকের অনুষ্ঠান শেষে আমাদের দুপুরের খাবারের কোন ব্যবস্থা ছিলনা। আগে থেকে একটি
হোটেলে মুরগি পাকাতে বলা হয়েছিল। পরিচ্ছন্নতার দিক বিবেচনা করে আমরা খেতে যাই নাই। তহশিল অফিসের টেবিলে খবরের কাগজে মুড়ি ঢেলে পাকা কলা দিয়ে দুপুরের লাঞ্চ সেরে ফেলি। এই যুগে বসে এই ধরনের আপ্যায়নের
কথা ভাবতে পারেন কি?
সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকাল ৩টায় বিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ও শ্রেনী কার্য্যμম পরিচালনার জন্য একটি অর্গানাইজিং
কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত অর্গানাইজিং কমিটিতে ছিলেন;
গঠিত অর্গানাইজিং কমিটিঃ
μমি
ক নং
নাম যোগ্যতা পেশা বয়স অভিজ্ঞতা
১ জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন
এফসিএমএ, -
আহবায়ক
বি কম অনার্স,
এমকম(একাউন্ট),
এফসিএমএ ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৯
ব্যবসা ৬৮ বৎসর আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী হিসাবে ৩৮
বছরের অভিজ্ঞতা। (ওঈই, ওঈগঅই,
ওওটঈ, ইওঋঞ) বিশেষায়িত শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক।
২ জনাব মাহমুদ আলী
যুগ্ন আহবায়ক
এম এ, পাবলিক
এডমিনিস্ট্রেশন,
চ.বি.১৯৮২
ব্যবসা ৫০ বৎসর রপ্তানী শিল্পে ১৯ বছরের অভিজ্ঞতা।
৩ জনাব মাও: মোস্তাফিজুর
রহমান- সদস্য সচিব
কামিল ১৯৭৮ রিটায়ার ৫১ বৎসর বায়তুল করিম মাদ্রাসায় প্রধান হিসাবে
কর্মরত।
৪ জনাব প্রকৌশলী মাকছুদুর
রহমান- সদস্য
এমএসসি ইঞ্জিনিয়ার,
বুয়েট। ১৯৭৫
রিটায়ার প্রাক্তন আঞ্চলিক মহাপরিচালক,
বিজিএমসি.।
৫ জনাব মোহাম্মদ নাছির
উল্যাহ- সদস্য
বিএ, সিএ,
চ.বি.১৯৭৭
ব্যবসা ৫১ বৎসর প্রতিষ্ঠিত হাউজিং ব্যবসায়ী।
৬ জনাব মোহাম্মদ শাহাদাত
হোসেন- সদস্য
এমএসসি, সোয়েল
সায়েন্স, ঢা.বি ১৯৭০
ব্যবসা ৬৩ বৎসর ৪১ বছরের ব্যবসার অভিজ্ঞতা।
৭ জনাব নাজিম উদ্দিন- সদস্য বিএ, চাকুরী ৪৫ বৎসর চট্রগ্রাম পোর্ট এ কর্মরত।
৮ আমিরুল ইসলাম মতিন-
সদস্য
বিএসসি ১৯৮০ ব্যবসা ৫৪ বৎসর ৩ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা।
৯ জনাব মাও:কারিমুল মোস্তফা-
সদস্য
কামিল সাবেক
ভাইস
প্রিন্সিপাল
মৃত মাদ্রাসার ভাইস প্রিনসিপল হিসাবে ২৫
বছরের অভিজ্ঞতা।
১০ জনাব নজরুল ইসলাম-
সদস্য
বিএ ব্যবসা ৩৪ বৎসর সন্ধানী লাইফ ইনস্যূরেন্স এডিপি হিসাবে
কর্মরত।
১১ জনাব হাজী মোহাম্মদ
ইউছুফ- সদস্য
৮ম শ্রেণী ব্যবসা ৬৩ বৎসর সমাজ সেবা
১২ জনাব শাহজাহান সিরাজ-
সদস্য
আই কম অবসরপ্রাপ্ত
সেনাবাহিনী
৪৭ বৎসর পপুলার লাইফ ইনস্যূরেন্স এডিপি হিসাবে
কর্মরত।
১৩ জনাব মোহাম্মদ আলাউদ্দিন-
সদস্য
কামিল ব্যবসা ৪৭ বৎসর সমাজ সেব
অর্গানাইজিং কমিটির তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাময়িক ভাবে একজন প্রধান সমন্বয়ক ও দুইজন সহকারী শিক্ষক
নিয়োগ করা হয়। এরা ছিলেন;
সাময়িক নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের পরিচিতিঃ
১। মোহাম্মদ আলী মানছুর - প্রধান সমন্বয়ক,
২। তানভীরুর রহমান - সহকারী শিক্ষক,
৩। মোঃ মানছুরুল হক - সহকারী শিক্ষক,
প্রধান সমন্বয়ক এর তত্বাবধানে এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আলহাজ¦ মাওলানা করিমুল মোস্তফা সাহেব এর সহযোগিতায়
১২/০২/২০০৮ ইং রোজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেনীতে ভর্তি ও পাঠদান কার্যμম আরম্ভ করা
হয়। সর্বমোট ১৮৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। মনে হয়েছিল বাধ ভাঙ্গা জোয়ার। যেই জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে স্কুলের
কার্যμম শুন্য হাতে শুরু করা হয় আশা ছিল ঘর করার জন্য এককালীন সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যাবে। তা আর হলো
না। জেলা প্রশাসক বদলী হয়ে চলে গেলেন। স্কুলের জমি বরাদ্দ, ঘর নির্মান, পাঠদান অনুমতি সবই শুরুতে হোচট
খেল।
৩ জুলাই ২০০৮ ইং তৎকালীন জেলা প্রশাসক স্কুল পরিদর্শন করেন। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সম্মানিত যুগ্ন
সমন্বয়ক জনাব মোহাম্মদ আলী ও জনাব মোহাম্মদ নাছির উল্যাহ- সদস্য, অর্গানাইজিং কমিটির অনুদানে বিনামূল্যে
শিক্ষার্থীদের পোষাক ও বই বিতরন করা হয়। জেলা প্রশাসক জনাব আব্দুল হক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন।
অনেকের মনে হয়ত প্রশ্ন জাগবে, এক সাথে ৩ ক্লাস (ার, ারর, াররর) এর শিক্ষার্থী কোথায় থেকে এল। আমরা ২০০৮
সালে ৩ ক্লাসে ১৮৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেছিলাম। অনেকেই মূল হাতিয়াতে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রেখে ছেলে
মেয়েদের ৬ষ্ঠ শ্রেনী পর্যন্ত পড়িয়েছেন। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর পর মেয়েদের পড়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বাড়ির
কাছে স্কুল পেয়ে আবার শুরু করেছেন। ঐ সময়ে ভর্তিকৃত ৭ম ও ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের আনন্দ ও উৎসাহ ছিল দেখার
মত। তারা ছিল অনেকটা আত্মহারা। জীবনে নতুন মাইলফলক যোগ হতে চলেছে।প্রধান সমন্বয়ক এর তত্বাবধানে এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আলহাজ¦ মাওলানা করিমুল মোস্তফা সাহেব এর সহযোগিতায়
১২/০২/২০০৮ ইং রোজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেনীতে ভর্তি ও পাঠদান কার্যμম আরম্ভ করা
হয়। সর্বমোট ১৮৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। মনে হয়েছিল বাধ ভাঙ্গা জোয়ার। যেই জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে স্কুলের
কার্যμম শুন্য হাতে শুরু করা হয় আশা ছিল ঘর করার জন্য এককালীন সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যাবে। তা আর হলো
না। জেলা প্রশাসক বদলী হয়ে চলে গেলেন। স্কুলের জমি বরাদ্দ, ঘর নির্মান, পাঠদান অনুমতি সবই শুরুতে হোচট
খেল।
৩ জুলাই ২০০৮ ইং তৎকালীন জেলা প্রশাসক স্কুল পরিদর্শন করেন। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সম্মানিত যুগ্ন
সমন্বয়ক জনাব মোহাম্মদ আলী ও জনাব মোহাম্মদ নাছির উল্যাহ- সদস্য, অর্গানাইজিং কমিটির অনুদানে বিনামূল্যে
শিক্ষার্থীদের পোষাক ও বই বিতরন করা হয়। জেলা প্রশাসক জনাব আব্দুল হক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন।
অনেকের মনে হয়ত প্রশ্ন জাগবে, এক সাথে ৩ ক্লাস (ার, ারর, াররর) এর শিক্ষার্থী কোথায় থেকে এল। আমরা ২০০৮
সালে ৩ ক্লাসে ১৮৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেছিলাম। অনেকেই মূল হাতিয়াতে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রেখে ছেলে
মেয়েদের ৬ষ্ঠ শ্রেনী পর্যন্ত পড়িয়েছেন। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর পর মেয়েদের পড়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বাড়ির
কাছে স্কুল পেয়ে আবার শুরু করেছেন। ঐ সময়ে ভর্তিকৃত ৭ম ও ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের আনন্দ ও উৎসাহ ছিল দেখার
মত। তারা ছিল অনেকটা আত্মহারা। জীবনে নতুন মাইলফলক যোগ হতে চলেছে। প্রথম প্রতিবন্ধকতা:
আমাদের পরিকল্পনা ছিল সাইক্লোন সেন্টারের নিচ তলার খোলা স্থানটি টিনের বেড়া দিয়ে ক্লাস চালিয়ে যাওয়া। জেলা
প্রশাসকের প্রত্যাশাও ছিল তাই। কিন্তু বাধ সাধে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জনাব দিপক চμবর্তী। উনার সাফ জবাব
ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের মালিক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব, জেলা প্রশাসক নয়। জায়গা দিতে তিনি নারাজ। আমরা
বিকল্প ঘরের সন্ধানে নামলাম। আমাদের অনেকেরই প্রস্তাব ছিল বাজারে পরিত্যাক্ত ঘর পাওয়া গেলে ভাড়া নিয়ে মেরাতম
করে স্কুলের ক্লাস চালিয়ে যাওয়া। কেউ প্রস্তাব করলো ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের নির্মান শেষ হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
জরাজির্ণ টিনের ঘরে ক্লাশ শুরু করা। খবর নিয়ে জানা গেল ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের কাজ শেষ হতে আরো বছর খানেক
সময় লাগবে।
বর্তমানে যেখানে স্কুল সেটি ছিল নিচু ফসলি জমি। ফেব্রুয়ারীতে ছিল মাঠ ভরা ধান। পাকতে আরো অনেক দিন বাকি।
যেভাবে হোক আমাদের টিকে থাকতে হবে। এডিসি রেভিন্যু এর সাথে আমাদের বনিবনা হচ্ছিলনা। তিনি ধান ক্ষেত
দেখিয়ে সেখানে ঘর করার মৌখিক নির্দেশ দেন। আমরা তখনও জানতাম না কোথায় স্কুলের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া
হবে। জেলা প্রশাসকের কাছে আমার জমির দাবী ছিল ৩ একর। দেখিয়ে দেওয়া স্থানে জমি দুই একর হবে কিনা সন্দেহ।
যাই হোক সমিতি সিদ্ধান্ত নেন ধান কাটা হলে সমিতির নিজ অর্থে ৬০ ফিট টিন শেড ঘর করার কাজ শুরু করা হবে।
সমিতির তৎকালীন সাধারন সম্পাদক মরহুম মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান সাহেব কে ঘর তৈয়ার করার জন্য দায়িত্ব
দেওয়া হল। মূল হাতিয়া থেকে মানুষের বাড়ি গিয়ে বড় বড় শিল কড়ই গাছ কিনে করাত কলে প্রয়োজন মত পালা,
চেরা, রুয়া ইত্যাদি করে নৌকা যোগে স্কুলের স্থানে আনা হল। ভিটের মাটি কাটা, ঘর তৈয়ার সবই তাহার তত্বাবধানে
২/৩ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হলো। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা শঙ্কা মুক্ত হলাম। কেউ হয়তো প্রশ্ন রাখবেন টাকা
এলো কোথায় থেকে। ১৯৮৬ সনে জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ছিলেন সমিতির সভাপতি। তিনি সিদ্ধান্ত দিয়ে গেলেন
প্রত্যেক সভাপতি তার মেয়াদ কালে কম পক্ষে ৫০০০ টাকার মেয়াদী আমানত রেখে যাবেন। এর ফলে এক সময়
সমিতির বড় আকারের মেয়াদী আমানত গড়ে উঠে। ২০০৭ সনে সমিতির এক প্রভাবশালী সদস্য কিছু টাকা ধার নিলেন।
শর্ত ছিল সমিতিকে লাভের অংশ দিবেন। যতদুর মনে পড়ে ১ লক্ষ টাকা লাভ দিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে প্রাথমিক অর্থ
জমানো টাকা থেকে এসেছিল। আরো অর্থ জোগাড় হয় ডোনারদের কাছে থেকে। তথ্য মতে ডোনার ছিলেন;
১। জনাব প্রকৌশলী মাকছুদুর রহমান ২। জনাব মর্তুজা আলী বাবুল
৩। জনাব নাসির উল্লাহ ৪। জনাব আকতার হোসেন কিরণ
৫। জনাব শাহাদাত হোসেন ৬। এড্যাভোকেট বদিউজ্জামান
৭। জনাব খলিল উল্লাহ চৌধুরী সাকিব ৮। জনাব হাছান নুরী
৯। জনাব আবুল হোসাইন ১০। মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান
১১। অধ্যাপক আ.খ.ম আব্দুল কাদের ১২। ডাক্তার মতি উদ্দিন
১৩। প্রফেসর শামসুদ্দিন ১৪। অধ্যাপক নুরু উন নবী এমরান
১৫। ইঞ্জিনিয়ার নুরুন নবী ১৬। জনাব মনিরুজ্জামান
১৭। এড: কামাল উদ্দিন ১৮। জনাব এনামুল হক
১৯। মো: ইলিয়াছ ২০। আবুল কালাম লিটু
২১। এড: আকতার হোসেন ২২। প্রফেসর ইব্রাহিম খলিল
২৩। রফিকুল ইসলাম সুজন ২৪। মো: নাজিম উদ্দিন
২৫। ফখরুদ্দিন চৌধুরী ২৬। জনাব মাইনুদ্দিন
২৭। আনোয়ার হোসেন তোফা ২৮। অধ্যাপক আশরাফ উদ্দিন
২৯। জনাব শামসুদ্দোহা সওগাত ৩০। লিছানুল আলম লেলেন
৩১। অধ্যাপক আবু শাহারিয়ার ৩২। মোজাম্মেল হোসেন
৩৩। মো: জাবের ৩৪। অধ্যাপক হায়াত হোসেন
৩৫। মির মোস্তাফিজুর রহমান
ভূমি জটিলতা:
সমিতির ১০/০৬/২০০৭ ইং তারিখের সিদ্ধান্ত মতে সমিতির সভাপতি জেলা প্রশাসকের নিকট ৩ একর জমির বন্দোবস্ত
চেয়ে আবেদন করা হয়। সেটি গড়াতে থাকে। জানানো হলো স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ভূমি বরাদ্দের আবেদন করতে
হবে। তাছাড়া এডিসি রেভিন্যু যে জমি আমাদেরকে দিতে চাইছিলেন সেটি মেপে পাওয়া গেল ১.৬৫ একর। পশ্চিম
দিকের জমি অন্য লোকের দখলে। দক্ষিন দিকের জমিতে একটি মাদ্রাসা চলছে। আমরা এর দক্ষিন দিকের পূর্ব অংশে
৬০ ফিট ঘর করে ফেলি। আমাদের আবেদন হাতিয়া এসি ল্যান্ড এ এসে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যায়। উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আবুল হাশেম সাহেবের সরাসরি তদারকিতে হাতিয়ার এসি ল্যান্ড হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট
এর নামে ১.৬৫ একর জমি বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশ এডিসি রেভিন্যু বরাবরে প্রেরন করেন। উনি দুটি আপত্তি দিলেন।
একটি হল সমিতির ট্রাস্টের নামে সরকারি ভূমি কেন বরাদ্দ দিবেন। দ্বিতীয়ত মাধ্যমিক স্কুল স্থাপনের জন্য জমি প্রয়োজন
.৫০ একর। প্রথম আপত্তি খন্ড করতে আমরা সমর্থ হই। দ্বিতীয় আপত্তির স্বপক্ষে আমার যুক্তি ছিল স্কুল ঘর ও খেলার
মাঠ কোন ভাবে .৫০ একর জায়গায় করা সম্ভব নয়। একটি স্ট্যান্ডার্ড খেলার মাঠে কতটুকু জমি লাগে, ৯০০/১০০০
শিক্ষার্থীর জন্য কতটুকু ঘর লাগবে সব হিসাব দেওয়া হল। ভদ্রলোক এক কথা। .৫০ একর জমি বরাদ্দ চেয়ে পুনরায় সুপারিশ করার জন্য। উনি ভূমির ফাইল হাতিয়াতে ফেরত পাঠিয়ে দেন। .৫০ একর বরাদ্দের সুপারিশ করে পুনরায়
পাঠাতে নথি লিখেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন আমাদের পক্ষে, বয়ার চরের তহশিলদার ছিলেন বুড়ির চরের
আদিবাসি এবং আমাদের সমিতির এক কর্মকর্তার নিকট আত্মীয়। তাহার পরামর্শ ও সহযোগিতায় জমি বরাদ্দ পাই।
হাতিয়াতে জমি বরাদ্দের নথি গায়েব হয়ে গেল। এই টানা পোড়নের সময় প্রাক্তন জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা খুব দরকার ছিল। কিন্তু পাইনি। উনি সঙ্গত কারণে অপারগতা প্রকাশ করেন। দীপক চμবর্তীর বদলীর পর ফাইল খুজে
পাওয়া গেল। আবার যুক্তি, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ১.৬৫ একর বরাদ্দের জন্য এডিসি রেভিন্যু এর কাছে পাঠানো হল।
দীপক চμবর্তীর বদলীর পর জনাব গোলাম ফারুক হরণী চানন্দী ইউনিয়নের ভূমি সরকারি কর্মকর্তা আবার মাঠে
নামেন। সমন্বয়ক জনাব আলী মানছুর ততদিনে প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্ব পান। প্রধান শিক্ষক জনাব ফারুক সাহেবের
পরামর্শ μমে জনাব আহম্মদ কবির - সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাতিয়াকে দিয়ে আবার ফাইল টেবিলে তোলেন।
মোহাম্মদ আবুল হাসেম- নির্বাহী অফিসার হাতিয়া সার্বক্ষনিক ভাবে এডিসি রেভিন্যু তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক
আতাউর রহমান ও এডিসি রেভিন্যু মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান কে দিয়ে স্কুলের নামে ১.৬৫ একর জমির বরাদ্দ করিয়ে
নেন। স্কুলের তরুন প্রধান শিক্ষক প্রথম সফলতার স্বাদ পান। বলা বাহুল্য জনাব মানছুর ইতিপূর্বে একদিনের জন্যও
কোন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকতা করেননি। তার উপর নব প্রতিষ্ঠিত স্কুলের প্রধান শিক্ষক এর দ্বায়িত্ব কিভাবে দেওয়া
হল এই প্রশ্নের উত্তর অজানা থেকে গেল। ঐসময় ঐ স্থানের জন্য কোন অভিজ্ঞ শিক্ষক খুজলেও পাওয়া যেত কি না তাহা
ছিল প্রশ্নাতিত।
দরকার ছিল। কিন্তু পাইনি। উনি সঙ্গত কারণে অপারগতা প্রকাশ করেন। দীপক চμবর্তীর বদলীর পর ফাইল খুজে
পাওয়া গেল। আবার যুক্তি, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ১.৬৫ একর বরাদ্দের জন্য এডিসি রেভিন্যু এর কাছে পাঠানো হল।
দীপক চμবর্তীর বদলীর পর জনাব গোলাম ফারুক হরণী চানন্দী ইউনিয়নের ভূমি সরকারি কর্মকর্তা আবার মাঠে
নামেন। সমন্বয়ক জনাব আলী মানছুর ততদিনে প্রধান শিক্ষকের দ্বায়িত্ব পান। প্রধান শিক্ষক জনাব ফারুক সাহেবের
পরামর্শ μমে জনাব আহম্মদ কবির - সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাতিয়াকে দিয়ে আবার ফাইল টেবিলে তোলেন।
মোহাম্মদ আবুল হাসেম- নির্বাহী অফিসার হাতিয়া সার্বক্ষনিক ভাবে এডিসি রেভিন্যু তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক
আতাউর রহমান ও এডিসি রেভিন্যু মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান কে দিয়ে স্কুলের নামে ১.৬৫ একর জমির বরাদ্দ করিয়ে
নেন। স্কুলের তরুন প্রধান শিক্ষক প্রথম সফলতার স্বাদ পান। বলা বাহুল্য জনাব মানছুর ইতিপূর্বে একদিনের জন্যও
কোন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকতা করেননি। তার উপর নব প্রতিষ্ঠিত স্কুলের প্রধান শিক্ষক এর দ্বায়িত্ব কিভাবে দেওয়া
হল এই প্রশ্নের উত্তর অজানা থেকে গেল। ঐসময় ঐ স্থানের জন্য কোন অভিজ্ঞ শিক্ষক খুজলেও পাওয়া যেত কি না তাহা
ছিল প্রশ্নাতিত।পাঠদান অনুমতি প্রসঙ্গ:
বলতে দ্বিধা নাই আমরা ছিলাম অনভিজ্ঞ। স্কুলে পাঠদানের জন্য বোর্ডের অনুমতি লাগবে এটা আমরা জানলাম বেশ
দেরিতে। ২০০৮ সনের নভেম্বরের দিকে পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদন প্রকৃয়া শুরু করা হল। ব্যাংক হিসাব
লাগবে, ৩০,০০০/- টকা। এফডিআর লাগবে, ৫০,০০০/- টাকা। চলতি হিসাবে জমা টাকা থাকতে হবে। ভূমির
মালিকানার খতিয়ান লাগবে আরো কত কি। চট্টগ্রাম শেখ মুজিব রোডে পুবালী ব্যাংকে স্কুলের নামে কারেন্ট একাউন্ট ও
৩০ হাজার টাকার মেয়াদি হিসাব খোলা হল। মরহুম মাওলানা মোস্তাফিজুর সাহেব, জনাব শাহাদত সাহেব ও জনাব
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এই তিনজন হিসাব পরিচালনার দ্বায়িত্ব পেলেন। টাকাও তাদের দিতে হবে। মহিউদ্দিন সাহেব
একাই টাকার যোগান দিলেন। স্থায়ী আমানত আজও স্কুলের নামে আছে। হাইস্কুলের জন্য আমানতের টাকা ৫০,০০০/-
সব নিয়ম কানুন পালন করে প্রয়োজনিয় ফি জমা দিয়ে চেয়ারম্যান- মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লাএর
দপ্তরে আবেদন করা হল। তারিখ ছিল ১১.০২.২০০৯ । আবেদন বাছাই প্রকৃয়ায় ভূমির মালিকানা নাই তাই আবেদন
অগ্রহনযোগ্যর তালিকায় চলে গেল। সরকারি খাস জমি বরাদ্দ প্রকৃয়াধীন আছে এই প্রত্যায়ন পত্র দিয়ে ফাইলকে সচল
করা হল। আহব্বায়ক কমিটির প্রধান জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বশরীরে বোর্ডের চেয়ারম্যান এর সঙ্গে দেখা করলেন।
এক পর্যায়ে বোর্ড থেকে নোয়াখালী জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব কাজী সলিমউল্লাহ কে শিক্ষা ট্রাস্ট বিদ্যালয় পরিদর্শন
করে রিপোর্ট প্রদান করতে নির্দেশ এলো। আমরা অনেক স্বস্তি বোধ করলাম। কারণ ছিল জেলা শিক্ষা অফিসার স্কুল
প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সরাসরি সম্পর্কিত ছিলেন। তিনি ১৩/০৫/২০০৯ তে স্কুল পরিদর্শনে এলেন। ফসলি ধান ক্ষেতে আজ ছিমছাম স্কুল। চার ক্লাস মিলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫৯ জন। বিদ্যালয় গৃহ দুটি ১২০ হাত লম্বা বারান্দা সহ ২০ ফিট
চওড়া, ১৩ জন শিক্ষক শিক্ষিকা, ঘরের আকার ৩২০০ বর্গফুট। ৮টি রুম, ৪৮ জন জেএসসি পরিক্ষার্থী। স্কুল প্রতিষ্ঠা
হল ২০০৮ এর ফেব্রুয়ারীতে। ২০০৯ সনে ৪ ক্লাস কি করে হল। তিনি কৌতুহলী হয়ে ৮ম এবং ৯ম এর ছাত্র ছাত্রীর
ক্লাস পরিদর্শন করলেন। তাদের হাজিরা দেখলেন। শিক্ষার মান যাচাই করলেন। সবই ঠিকঠাক। যেন আলাউদ্দিনের
চেরাগ !! জেলা শিক্ষা অফিসার ০২/০৮/২০০৯ তে তাহার রিপোর্ট জমা দিলেন। জানা ছিল না শিক্ষা বোর্ড বছরের শেষের দিকে
প্রতি বৎসর একবার মিটিং এ পাঠদান, নতুন বিষয়ের অনুমোদন, সেকশন খোলা ইত্যাদির অনুমোদন দিয়ে থাকেন।
তাদের অনুমোদন পরবর্তী বৎসর শুরু হলে অনুমোদন বাস্তবায়ন শুরু হবে। অপেক্ষার পালা চলতে থাকে। অবশেষে,
বোর্ড মিটিং হল কিন্তু হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট স্কুল পাঠদানের অনুমতি পেল না। কি কারণে অনুমতি দেওয়া হল
না সেটাও জানা গেল না। অনুমান করা হয় ভূমির মালিকানা না থাকা। দেন, দরবার চলতে থাকে। ২০০৮ সনে ৮ম
শ্রেনীতে ভর্তি হওয়াদের অন্য স্কুল থেকে রেজিষ্ট্রেশন করে পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হল।
২০০৯ সাল শেষ হয়ে গেল। জমি বন্দবস্ত নিয়ে জটিলতাও কাটেনি। প্রতিরক্ষার প্রহর দীর্ঘ হয়। মাস কেমন দীর্ঘ হয়
সেটা ভুক্তভুগি ছাড়া কেউ চিন্তা করতে পারবে না। লেনদেনের ব্যাপারে আমরা উদার হলাম। তারপরও প্রতিক্ষার প্রহর
শেষ হচ্ছিলনা। এক পর্যায়ে জানা গেল বোর্ডের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বয়ং পুনরায় বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন।
ভাব এমন ছিল জেলা শিক্ষা অফিসারের পরিদর্শন রিপোর্ট আমল যোগ্য নয়। কি অদ্ভুত নিয়ম কানুন !! পুনঃ পরিদর্শনের
খবর পাওয়ার পর বোর্ডের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়মিত আসা যাওয়া শুরু করেন প্রধান শিক্ষক। নানা আলোচনা ও দেন দরবার
চলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। আমরা জমির জটিলতা এবং একাডেমিক স্বীকৃতি (পাঠদানের অনুমতি) ছাড়া ২০০৮ ও ২০০৯
পার করলাম। ২০১০ ও প্রায় শেষ হতে চলেছে। তেমন কোন নির্ভরযোগ্য পরিদর্শন শিডিউল পাওয়া যাইতেছিল না।
ডিসেম্বরে বোর্ডে মিটিং হবে। মনে হয় ২০১১ তে স্কুলের নামে ভর্তি হাতছাড়া হতে চলেছে। নিরাশ হয়েও সেটা মুখ
ফুটে কাউকে বলা যাচ্ছিল না। শেষতক ০৬/১২/২০১০ এ কুমিল্লা বোর্ডের কর্তা ব্যাক্তিগন পরিদর্শনে এলেন। সরজমিনে
সব দেখে অপ্রত্যাশিত ভাবে উচ্ছাস প্রকাশ করলেন। ২০১০ এ শিক্ষার্থী পেলেন ৩১৫ জন। আগের রিপোর্ট ছিল ২৯৫
জন। আর সব হুবহু পুর্বের রিপোর্টের মত। কোথাও এক চুল পরিমান পার্থক্য পেলেন না। স্কুল কর্তৃপক্ষ খাতির যতেœর
কিছু অপুরন রাখলেন না।
অবশেষে বোর্ডের অনুমোদন কমিটির মিটিং এর ডেট পড়ল ১০/১২/২০১০ ইং। আল্লাহর কাছে চাইছিলাম মিটিং টা
যেন নির্দ্ধারিত দিনে অনুষ্ঠিত হয়। শেষতক মিটিং হল। ২০১১ শিক্ষাবর্ষের জানুয়ারী থেকে পাঠদানের অস্থায়ি অনুমতি
প্রদান করা হয়। প্রতি দুই বৎসর পর পর এই অস্থায়ি স্বীকৃতি নবায়ন করতে হবে। অনুমতি পত্রের শর্তের সংখ্যা ছিল
২০ টি। উল্লেখ করা প্রয়োজন ১৪/০২/২০১০ ইং তে ১.৬৫ একর জমি স্কুলের নামে নথি অনুমোদিত হয় এবং
১১/১২/২০১০ খতিয়ান জারি হয়। ¯ু‹লের নামে ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম এবং ৯ম শ্রেনীতে যাহারা পড়ে তাহারা ২০১১ তে স্কুলের
নামে জেএসসি পরিক্ষার অনুমতির দাবিদার হবে। বাস্তব অবস্থা ছিল ২০০৯ আমাদের ৪৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল
পাশ করেছে ৪২ জন। ২০১০ এ পরীক্ষা দিয়েছে ৩১ জন পাশ করেছে ২৯ জন। কি অভাবনিয় সাফল্য?জেলা শিক্ষা অফিসার ০২/০৮/২০০৯ তে তাহার রিপোর্ট জমা দিলেন। জানা ছিল না শিক্ষা বোর্ড বছরের শেষের দিকে
প্রতি বৎসর একবার মিটিং এ পাঠদান, নতুন বিষয়ের অনুমোদন, সেকশন খোলা ইত্যাদির অনুমোদন দিয়ে থাকেন।
তাদের অনুমোদন পরবর্তী বৎসর শুরু হলে অনুমোদন বাস্তবায়ন শুরু হবে। অপেক্ষার পালা চলতে থাকে। অবশেষে,
বোর্ড মিটিং হল কিন্তু হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট স্কুল পাঠদানের অনুমতি পেল না। কি কারণে অনুমতি দেওয়া হল
না সেটাও জানা গেল না। অনুমান করা হয় ভূমির মালিকানা না থাকা। দেন, দরবার চলতে থাকে। ২০০৮ সনে ৮ম
শ্রেনীতে ভর্তি হওয়াদের অন্য স্কুল থেকে রেজিষ্ট্রেশন করে পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হল।
২০০৯ সাল শেষ হয়ে গেল। জমি বন্দবস্ত নিয়ে জটিলতাও কাটেনি। প্রতিরক্ষার প্রহর দীর্ঘ হয়। মাস কেমন দীর্ঘ হয়
সেটা ভুক্তভুগি ছাড়া কেউ চিন্তা করতে পারবে না। লেনদেনের ব্যাপারে আমরা উদার হলাম। তারপরও প্রতিক্ষার প্রহর
শেষ হচ্ছিলনা। এক পর্যায়ে জানা গেল বোর্ডের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বয়ং পুনরায় বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন।
ভাব এমন ছিল জেলা শিক্ষা অফিসারের পরিদর্শন রিপোর্ট আমল যোগ্য নয়। কি অদ্ভুত নিয়ম কানুন !! পুনঃ পরিদর্শনের
খবর পাওয়ার পর বোর্ডের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়মিত আসা যাওয়া শুরু করেন প্রধান শিক্ষক। নানা আলোচনা ও দেন দরবার
চলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। আমরা জমির জটিলতা এবং একাডেমিক স্বীকৃতি (পাঠদানের অনুমতি) ছাড়া ২০০৮ ও ২০০৯
পার করলাম। ২০১০ ও প্রায় শেষ হতে চলেছে। তেমন কোন নির্ভরযোগ্য পরিদর্শন শিডিউল পাওয়া যাইতেছিল না।
ডিসেম্বরে বোর্ডে মিটিং হবে। মনে হয় ২০১১ তে স্কুলের নামে ভর্তি হাতছাড়া হতে চলেছে। নিরাশ হয়েও সেটা মুখ
ফুটে কাউকে বলা যাচ্ছিল না। শেষতক ০৬/১২/২০১০ এ কুমিল্লা বোর্ডের কর্তা ব্যাক্তিগন পরিদর্শনে এলেন। সরজমিনে
সব দেখে অপ্রত্যাশিত ভাবে উচ্ছাস প্রকাশ করলেন। ২০১০ এ শিক্ষার্থী পেলেন ৩১৫ জন। আগের রিপোর্ট ছিল ২৯৫
জন। আর সব হুবহু পুর্বের রিপোর্টের মত। কোথাও এক চুল পরিমান পার্থক্য পেলেন না। স্কুল কর্তৃপক্ষ খাতির যতেœর
কিছু অপুরন রাখলেন না।
অবশেষে বোর্ডের অনুমোদন কমিটির মিটিং এর ডেট পড়ল ১০/১২/২০১০ ইং। আল্লাহর কাছে চাইছিলাম মিটিং টা
যেন নির্দ্ধারিত দিনে অনুষ্ঠিত হয়। শেষতক মিটিং হল। ২০১১ শিক্ষাবর্ষের জানুয়ারী থেকে পাঠদানের অস্থায়ি অনুমতি
প্রদান করা হয়। প্রতি দুই বৎসর পর পর এই অস্থায়ি স্বীকৃতি নবায়ন করতে হবে। অনুমতি পত্রের শর্তের সংখ্যা ছিল
২০ টি। উল্লেখ করা প্রয়োজন ১৪/০২/২০১০ ইং তে ১.৬৫ একর জমি স্কুলের নামে নথি অনুমোদিত হয় এবং
১১/১২/২০১০ খতিয়ান জারি হয়। ¯ু‹লের নামে ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম এবং ৯ম শ্রেনীতে যাহারা পড়ে তাহারা ২০১১ তে স্কুলের
নামে জেএসসি পরিক্ষার অনুমতির দাবিদার হবে। বাস্তব অবস্থা ছিল ২০০৯ আমাদের ৪৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিল
পাশ করেছে ৪২ জন। ২০১০ এ পরীক্ষা দিয়েছে ৩১ জন পাশ করেছে ২৯ জন। কি অভাবনিয় সাফল্য?
৯ম শ্রেনী খোলার অনুমতির আবেদন:
আমাদের শিক্ষার্থীগন ২০১১ থেকে এসএসসি পরিক্ষা দিতে শুরু করে। পড়াই আমরা পরিক্ষা দেয় অন্য স্কুলের নামে।
২০১১ তে ৭ জন, ২০১২ তে ১২ জন, ২০১৩ তে ৩৩ জন এসএসসি পরিক্ষা দেয়। ৫, ৯, ৩০ জন যথাμমে পাশ
করে। পাশের হার ছিল ৭১.৪২%, ৭৫% এবং ৯০.৯০%।
মাধ্যমিক স্কুল হিসাবে স্থায়ি স্বীকৃতি না হলে ৯ম শ্রেনীতে ভর্তি করা যাবে না। তাই আমরা ২০১২ তে নবম শ্রেনীতে
পাঠদানের অনুমতির আবেদন করি। আবেদন মানে টাকা। ৫০,০০০/- টাকার স্থায়ি আমানত। ৩০,০০০/- টাকার
কারেন্ট একাউন্ট ব্যালান্স সবই ব্যবস্থা হল। দেন দরবার করে ২০১৫ থেকে ৯ম শ্রেনীতে ভর্তির অনুমতি মিলে। তাহাও
আবার শুধু কলা ও বানিজ্য বিভাগের জন্য।
বিজ্ঞান শাখার অনুমতি:
জেএসসি তে ভালো ছাত্রছাত্রী সঙ্গত কারনে বিজ্ঞান পড়তে চায়। আমাদের ভর্তির অনুমতি নাই। কিন্তু আমরা
অনুনমোদিত বিজ্ঞান শাখা চালু করি। আবেদন, নিবেদন, দেন দরবার করে ২০১৬ তে বিজ্ঞান শাখার অনুমতি পাই।
স্কুল প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সংগ্রাম শুরু করি ২০০০ সনে। স্কুল প্রতিষ্ঠা হয় ২০০৮ এ। পুর্নাঙ্গ হাইস্কুল হিসাবে স্বীকৃত হয় ২০১৬
সনে।
নতুন যুদ্ধের সূচনা:
এটি মুলত পরীক্ষা কেন্দ্র নিয়ে। এপারের ছেলে মেয়েরা মূল হাতিয়াতে গিয়ে পরীক্ষা দিতে নারাজ। এই নারাজির বাস্তব
সম্মত কারণও ছিল। পরীক্ষা দিতে গিয়ে প্রচুর অর্থ ব্যয় অনেক গরিব অবিভাবকের পক্ষে বহন করা দুরহ হয়ে পড়ে।
মেয়েদের নিরাপত্তাও ছিল আর একটা বিষয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ট্রাস্ট স্কুলে জেএসসি উপকেন্দ্র
খোলার ব্যাপারে দেন দরবার শুরু করেন। প্রচেষ্টার সঙ্গে অর্থ ব্যয় জড়িত। অর্থ যা লাগে ব্যবস্থা হবে, চাই অনুমতি।
শেষতক ২০১৬ থেকে ট্রাস্ট স্কুল হাতিয়া-৪ কেন্দ্র হিসাবে অনুমতি পায়। অনুমতি পত্রে শর্তের সংখ্যা ছিল . ১৪ টি।
২০১৬ এ মোট ১৭৫ জন পরিক্ষায় অংশ নেয়। এই সংখ্যা ২০২০ এ দাড়ায় ১৬৬ জন। দুটো স্কুলকে কেন্দ্র দেওয়ার
নজির বিহীন ঘটনা। আগামীতে এই কেন্দ্রের স্কুল সংখ্যা দাড়ায় ৩টি। জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট হাই স্কুল, আদর্শ গ্রাম হাই
স্কুল, হাতিয়া জনকল্যাণ আদর্শ হাই স্কুল (ভূমিহীন বাজার)।
হামলা মামলা:
পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে ধান ক্ষেতে স্কুলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। স্কুল ঘরও নির্মান করা হয়েছিল। সংগত
কারণে স্কুলে যাবার রাস্তা ছিল না। বাজার থেকে তহশীল অফিসে যাবার রাস্তাটি স্কুলের জন্য ব্যবহার হয়ে আসছিল।
নতুন তহশীলদার এসে তাদের সীমানা প্রাচীর তুলে স্কুলে যাবার রাস্তা বন্ধ করে দেন। এতে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের
মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একদিন শিক্ষার্থীরা রাস্তার অংশে তোলা দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। প্রধান শিক্ষককে আসামি
করে মামলা দায়ের হয়। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।
সময় কাল ছিল ২০১৪ দীর্ঘ দেড় বৎসর পর মামলার আপোষ নিঃস্পত্তি হয়। আজ পর্যন্ত স্কুলে যাবার রাস্তা নাই। যে যার
মত করে কোনা কানি দিয়ে স্কুলে আসে। সাইক্লোন সেন্টারের পশ্চিম পাশ দিয়ে ঢুকার একটা কাঁচা রাস্তা করা হয়েছে। মাঠের পূর্ব পাশ দিয়ে একটি রাস্তার আবেদন ইউনিয়ন কাউন্সিলের অফিসে জমা আছে। কবে হবে আল্লাহই ভালো
জানে।
বর্তমান অবস্থা
হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাষ্ট হাই স্কুল-
২০১৫ থেকে পিইসি পরীক্ষা কেন্দ্র।
২০১৬ থেকে জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র।
২০২৩ থেকে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র।
শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮০০। ৬০% এর উপর ছাত্রী। ২০২০ এ ১৬৯ জন এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
হাতিয়াতে শিক্ষার প্রসারের যে নজির চট্টগ্রামস্থ হাতিয়া জনকল্যাণ সমিতি স্থাপন করেছে এমন নজির বিরল ঘটনা।
সরকারী অনুদান বলতে কিছুই পাইনি। সরকারী অর্থে অবশ্য একটি ভবন নির্মান সহসাই শুরু হবে। স্থানীয় ও জাতীয়
রাজনীতিতে যাহারা সμিয় তাহারা স্কুল পরিচালনার ব্যাপারে কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করেননি। এটি একটি বিরল দিক।